ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ খামেনেয়ী বলেছেন, সিরিয়ায় শত্রুরা দ্রুত কাজ করেছে, কিন্তু তাদের উচিত ছিল আগেই বিষয়টি আঁচ করা এবং তা প্রতিরোধ করা। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কয়েক মাস আগেই সিরিয়ার কর্মকর্তাদের কাছে এ সংক্রান্ত সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল।
ইরানের গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো সিরিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছেছিল নাকি মাঝপথে হারিয়ে গিয়েছিল, সে বিষয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নিশ্চিত নন, তবে এটা নিশ্চিত যে, কয়েক মাস আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ইরান অবহিত করেছিল।
সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি ও দুর্ভোগ হচ্ছে প্রতিরোধ ও দৃঢ়তার মনোভাবে ঘাটতি ও দুর্বলতার ফলাফল যা সিরিয়ার সেনাবাহিনী দেখিয়েছে। একটি দেশের সেনাবাহিনীকেই মূল যুদ্ধ করতে হয়। অন্য জায়গা থেকে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী কেবল সেদেশের সেনাবাহিনীর পাশে থেকে লড়াই চালাতে পারে। স্থানীয় সেনাবাহিনী দুর্বলতা দেখালে স্বেচ্ছাসেবীরা কিছু করতে পারে না। দুর্ভাগ্যবশত, সিরিয়ায় তাই ঘটেছে।
এটা যৌক্তিক নয় এবং জনমতও এটা মেনে নেবে না যে, ইরানের সেনাবাহিনী গিয়ে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর জায়গায় যুদ্ধ করবে। না, যুদ্ধ করার দায়িত্ব সেদেশের সেনাবাহিনীর। আমাদের বাহিনী যা করতে পারত তা করেছে। আর তা হলো পরামর্শ দেওয়া।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা সম্প্রতি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষের এক সমাবেশে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সিরিয়ায় যা ঘটেছে তাতে সিরিয়ার একটি প্রতিবেশী দেশের সরকার স্পষ্ট ভূমিকা পালন করেছে এবং এখনও করছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রের মূল হোতা এবং প্রধান নিয়ন্ত্রণ কক্ষ আমেরিকা ও ইহুদিবাদী ইসরাইলে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে; কাজেই এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ইসলামী বিপ্লবের নেতা জোর দিয়ে বলেন, সিরিয়ার সাহসী যুবকরা অবশ্যই রুখে দাঁড়াবে এমনকি দৃঢ়তার মাধ্যমে ও ক্ষয়ক্ষতি মেনে নেয়ার মাধ্যমে এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠবে, যেমনিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলদারিত্বের পর ইরাকের সাহসী যুবকরা আমাদের প্রিয় শহীদের সাহায্য-সহযোগিতায় ও নেতৃত্বে তাদের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট থেকে শত্রুদের বিতাড়িত করেছে।
সিরিয়ার ঘটনাবলীর শিক্ষা প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, প্রথম শিক্ষা হলো শত্রুকে অবহেলা না করা।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, বিপ্লবের পর ৪৬ বছরে আমরা অনেক বড় ও কঠিন ঘটনা পেরিয়ে এসেছি। নানাধর্মী এবং তিক্ত ঘটনাবলীর মধ্যেও ইসলামী প্রজাতন্ত্র এক মুহূর্তের জন্যও নিষ্ক্রিয় থাকে নি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ইরানি জাতিকে সদাপ্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমতে ইহুদিবাদ ও পাশ্চাত্যের ঘৃণ্য দালালদের শেকড় এই অঞ্চল থেকে উপড়ে যাবে।
ফিলিস্তিন দখলের পর ৭৫ বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে উল্লেখ করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, এই দীর্ঘ সময়ে এই ইস্যুটি ভুলে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ফিলিস্তিনিদের তথা এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতিরোধের কারণে ফিলিস্তিন ইস্যুটির গুরুত্ব দখলের সময়ে চেয়ে দশ গুণেরও বেশি বেড়েছে।
তিনি ইহুদিবাদীদের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতাকে জাতিগুলোর রেড লাইন হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ইহুদিবাদীদের পাশাপাশি তাদের সহযোগীদের জানা উচিত ঐশী নিয়ম অনুযায়ী অপরাধ বিজয়ী হতে পারে না। বর্তমানে গাজা, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীর এবং লেবাননে ঐশী সুন্নাহ এবং ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
Leave a Reply