লেবাননে দীর্ঘদিন ধরে চলা অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন ৮৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। রোববার পদত্যাগের এ ঘোষণা দেন তিনি। পদত্যাগের পর প্রেসিডেন্ট প্যালেসও ছেড়েছেন সদ্য সাবেক এ প্রেসিডেন্ট।
রোববার বৈরুতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে সমর্থকদের উদ্দেশে আউন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করছে যার জন্য বিশাল প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
এদিকে, আউনের পদত্যাগের পর তার উত্তরসূরির বিষয়ে একমত হতে পারেনি দেশটির পার্লামেন্ট। সাংবিধানিকভাবে লেবাননের প্রেসিডেন্টের কোনো বিলে স্বাক্ষর করে আইনে পরিণত করার, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করার এবং কোনো দলকে সরকার গঠনের বিষয়ে সবুজ সংকেত দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
লেবাননে বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং চরম রাজনৈতিক সংকটে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মিশেল আউন। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে কয়েকটি বড় ধরনের আন্দোলন সামাল দিতে হয়েছে তাকে।
লেবাননে মিশেল আউন একজন গভীরভাবে বিভাজনকারী ব্যক্তিত্ব। অনেক খ্রিস্টান তাকে পছন্দ করেন। খৃস্টানরা মূলত আউনকে লেবাননের সাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় তাদের রক্ষক হিসাবে দেখে থাকেন।
কিন্তু সমালোচকদের কাছে তিনি দুর্নীতিকে আরও বাড়িয়ে তোলা এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে প্রভাব অর্জনে সহায়তা করার অভিযোগে অভিযুক্ত। ২০১৬ সালে লেবাননের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন মিশেল আউন।
সেসময় সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যারোনাইট খ্রিস্টান রাজনীতিবিদ সামির গেগা উভয়ের মধ্যকার একটি চুক্তিতে তাকে এই পদে সমর্থন করা হয়েছিল। আর সেই চুক্তির ফলে তৎকালীন নেতৃস্থানীয় সুন্নি রাজনীতিবিদ সাদ আল-হারিরি লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর পদে এসেছিলেন।
২০১৪ সালের মে মাসে লেবাননের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মিশেল সুলাইমান মেয়াদ শেষ হওয়ায় পদত্যাগ করেন। এরপর টানা ২৯ মাস রাষ্ট্র প্রধানহীন অবস্থায় থাকার পর দায়িত্ব নেন মিশেল আউন।
গত ৬ মাস ধরে দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশটি পরিচালনা করছে।
Leave a Reply