বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকা বিশ্বের ১২৪টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) ৫৪ বায়ুমান নিয়ে ঢাকার বাতাস সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও আজ তা আবার অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে অবস্থান করছে। আজ বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (একিউআই) বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় ১৭৯ বায়ুমান নিয়ে ঢাকার অবস্থান পাঁচে।
সকাল ৯টার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৯১ একিউআই স্কোর নিয়ে বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে চীনের গোয়াংজু শহর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চেংদু (২২০) ও চংকুইং (২০৪)। এই শহরগুলোর বাতাসের মান সংস্থাটির মতে, ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’। চতুর্থ স্থানে রয়েছে চীনের আরেক শহর চিংজিং, যার একিউআই স্কোর ১৯৩। আর ১৭৯ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ঢাকা।
আইকিউএয়ার জানায়, ঢাকার বাতাসে দূষণের প্রধান উৎস হলো অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (PM2.5), যা সরাসরি মানুষের শ্বাসতন্ত্র, হৃদরোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
বিশ্বের ১২৪টি শহরের মধ্যে ঢাকার এই অবস্থান বায়ুদূষণের অব্যাহত ভয়াবহতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, পরিবেশবান্ধব নীতিমালা ও কঠোর বাস্তবায়ন ছাড়া এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এই পরিস্থিতিতে বাইরে বের হলে মাস্ক পরা, খোলা স্থানে ব্যায়াম এড়ানো এবং ঘরের জানালা বন্ধ রাখা উচিত। বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে জনসচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
Leave a Reply