কয়েক দিন ধরে উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে বন্যা দুর্গত ১৮ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ২০ লাখ মানুষ। এসব এলাকায় রয়েছে ত্রাণের চরম সংকট। তবে আগামী তিন দিনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
রংপুরের তিস্তার পানি বেড়ে কাউনিয়া ও পীরগাছায় অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি অর্ধলাখ মানুষ। পানির প্রবল স্রোতে ভেঙে গেছে পাকা সড়ক ও ব্রিজ। সেই সঙ্গে তিস্তার পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। এতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, গতকাল রোববার (৭ জুলাই) বিকেলে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ছাড়াও ত্রাণ বিতরণ করেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান। ওই সময় তিনি ভাঙা সড়ক ও ব্রিজ দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করেন।
অন্যদিকে, লালমনিরহাটে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে ৫০টির বেশি গ্রাম। এতে পানিবন্দি লাখো মানুষ। আদিতমারির মহিষখোচা তিস্তা নদীর স্পার বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এছাড়া পানিবন্দি গাইবান্ধা সদরের ৮০ হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে আড়াই হাজার হেক্টরের বেশি ফসলের জমি।
এছাড়া বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনার পানি। পানি ঢুকছে নতুন নতুন এলাকায়। ইতোমধ্যে সিরাজগঞ্জে পাঁচ উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে বন্যার পানি ঢুকেছে। এতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে।
এদিকে, জামালপুরে কমতে শুরু করেছে যমুনার পানি। তবে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তবে বন্যার পানি জমে থাকায় এখনো সাত উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নের লাখখানেক মানুষ পানিবন্দি। পানির চাপে ভেঙে গেছে এলাকার অনেক কাঁচা-পাকা সড়ক। সেই সঙ্গে বন্যার পানি এখনো হু-হু করে ঢুকছে গ্রামীণ জনপদে। অন্যদিকে, রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে দুর্গত এলাকার সঙ্গে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়া সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পানিবন্দি ১৩টি উপজেলার সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ।
Leave a Reply