সভ্যতা বিবর্তনের সূচনালগ্ন থেকেই আমরা নারী নির্যাতন শব্দটির সাথে পরিচিত। আদিম সাম্যবাদী সমাজ থেকে শুরু করে বর্তমান পুঁজিবাদী সমাজের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমরা নারীর অবমূল্যায়নের যে চিএ দেখতে পাই তা কোন সভ্য সমাজ ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। নারীর প্রতি সহিংসতার কারণ গুলোকে আমরা কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে পারি। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা। সমাজে নারী নির্যাতন ঝড়ের গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ অশিক্ষা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ প্রভৃতি।
নারীর প্রতি সহিংসতার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। অন্যদিকে দারিদ্রতা আমাদের দেশের একটি প্রধান সমস্যা, যার ফলপ্রসূ যৌতুক প্রবণতা খুব বেশি দেখা যায়। মেয়ের বাবা বিয়ের সময় যদি মোটা অংকের যৌতুক দিতে অসমর্থ হয় তাহলে বিয়ের পরবর্তী দিন থেকেই মেয়ের জীবনে শুরু হয় ভয়াবহ সহিংসতা যার শেষ পরিণতি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সমাজে এ ছাড়াও রয়েছে অর্থদণ্ডের বিধান। তবে শুধু মাত্র আইন দিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করা সম্ভব না, এর জন্য প্রয়োজন আইনের যথাযথ হস্তক্ষেপ।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ ধর্মকে অপব্যাখা দিয়ে নারীর উপড়েই চাপিয়ে দেয় সব নিয়ম কানুন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সহিংসতা তুমল হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য দেশের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে নারীর প্রতি ভয়াবহ রকমের সহিংসতার দৃশ্য যার সঠিক পরিসংখ্যান দার করানো সম্ভব নয়।
অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও রয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন যা তৈরি করা হয় ২০০০ সালে এবং তা পুনরায় সংশোধন করা হয় ২০১৩ সালে। সংশোধিত আইন ২০১৩ অনুযায়ী অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে এ ছাড়া রয়েছে অর্থদণ্ডের বিধান। পরিশেষে একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলা যায়, পৃথিবীর সকল দেশের নারীরা বাঁচুক সহিংসতা মুক্ত জীবন নিয়ে। সামজে নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা বন্ধ হোক, যাতে তারা খুঁজে পায় তাদের আপন শেকড়।
Leave a Reply