ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২ জুন) বিকেলে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠক শেষে নিজেদের অবস্থান গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেন বিএনপি-জামায়েতে ইসলামী-জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে তারা বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, নির্বাচন ডিসেম্বরের পর যাওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেছেন, আমরা মনে করি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান করা খুবই সম্ভব। এর আগে যে সব সংস্কার করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নির্বাচনমূখী সেই সংস্কারগুলো চিহ্নিত করে ঐকমত্যের মাধ্যমে সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা যায়।
চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে, এই নির্বাচনের আগে লেভেল প্লেইং ফিল্ড প্রস্তুত ও প্রবাসীদের ভোটদানের সুযোগ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে দলটি।
দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, আমরা বলেছি জুলাইয়ের ভেতর এই সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। অনেক বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। কিছু বিষয়ে সামান্য দ্বিমত আছে। জুলাইয়ের ভেতর সংস্কার শেষ হবে, তারপর একটা জুলাই সনদ হবে, সেখানে আমরা সকল রাজনৈতিক দল নীতিগত একমত হয়েছি যে সেই চার্টারে আমরা সাইন করবো।
জুলাই সনদ কার্যকর হওয়ার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না—এ কথা বলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, জুলাই সনদ ঘোষণার আগে যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়, তাহলে সংস্কারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে চলছে তাতে তাদের ওপর আস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, আমরা আহ্বান জানিয়েছি, ১৬ বছর আমরা অপেক্ষা করেছি, এরপর ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস অপেক্ষা করতে চাই এবং সরকারকে সময় দিতে চাই সব রাজনৈতিক দল মিলে। দুই মাসের মধ্যে আমাদের জুলাই সনদ, যেখানে জনগণ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ শাসনের রূপরেখা, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা দেখতে পারবে।
সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দূরত্ব তৈরি হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারীর জোনায়েদ সাকি।
প্রসঙ্গত দ্বিতীয় দফায় রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে সংলাপে বসেছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন। সংলাপের উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই সনদ করতে সব দল একমত হয়েছে। সংস্কার প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রস্তাবে দলগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপে চেষ্টা করা হবে।
Leave a Reply