1. admin@kishorganjeralo.com : kishorganjeralo.com :
  2. admin@shadinota.net : shadinota net : shadinota net

যুক্তরাষ্ট্রে ছাত্র বিক্ষোভে পুলিশি অভিযানে বিপর্যস্ত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস

  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
  • ১৫ বার পঠিত

নিউইয়র্ক শহরের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব প্রবেশ পথেই এখন পুলিশ ও ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীদের ভিড়, রাস্তায় ব্যারিকেড। জিনিসপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাড়ির উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ছাড়ছে। ক্লাস বাতিল হয়েছে আর পরীক্ষা কবে হবে ঠিক নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এর পর কী হতে যাচ্ছে তা নিয়েই সর্বত্র এক থমথমে ভাব আর অনিশ্চয়তা।

বিবিসিকে শিক্ষার্থীরা বলেছেন মঙ্গলবার গাজার ঘটনার প্রতিবাদ ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যামিলটন হলে অভিযান চালিয়ে একশোর বেশি মানুষকে আটকের ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসই এখন বিপর্যস্ত।

এদিকে, পুলিশি অভিযানের পর এক বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত শফিক বলছেন, “তাকে গভীর দু:খ নিয়েই শিক্ষার্থী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের নির্দেশ পুলিশকে দিতে হয়েছে। এবং এ ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে।”

অন্যদিকে, লস এঞ্জেলসে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার ঘটনায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর। সেখানে ক্যাম্পাসে পুলিশকে ডাকার আগেই সেখানে মুখোশ পরিহিত ইসরায়েলপন্থী একটি গ্রুপ ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের তাবুতে হামলা চালায়।

গভর্নরের মুখপাত্র বলেছেন, এ ঘটনায় ‘সীমিত ও বিলম্বিত’ পুলিশি হস্তক্ষেপ মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। বুধবার ওই ক্যাম্পাসে শত শত পুলিশ কর্মকর্তা অবস্থান নিয়েছিলো।

তবে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের তাঁবুকে ঘিরে সংঘর্ষের সময় পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়নি। যদিও কর্মকর্তারা বলেছেন সহিংসতার সূচনার পর দ্রুত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিলো।
ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও কোম্পানিকে বয়কটের দাবিতে গত কিছুদিন ধরেই প্রচণ্ড ছাত্র বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। মঙ্গলবার রাতে কয়েকটি জায়গায় তা সংঘর্ষের রূপ নেয়।

বিপর্যস্ত কলাম্বিয়া পরিবার
নিউইয়র্কের মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে তা ঠিক হতে কতদিন লাগবে তা কারও জানা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী আন্না ওআকস মঙ্গলবার রাতের ঘটনা কাভার করেছেন।

“মনে হচ্ছে সব ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে,” বলছিলেন তিনি।

এক রাতের নৈরাজ্য ও সংঘাতের পর বুধবার সকালে ক্যাম্পাস এলাকা ছিলো অন্যরকম। বিক্ষোভকারীদের একজন বলেছেন, “থামবো না। আমরা বিশ্রামে যাবো না।”

শিক্ষার্থীদের অনেকে জিনিসপত্র গুছিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন। এখনো যারা আছেন তারা বলছেন যে তারা এখন অনেকটা অন্ধকারে এবং ডাইনিং সার্ভিস দ্রুতই চালু হবে কিনা তাও তাদের জানা নেই।

এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের শিক্ষার্থী উইল পারকিনসন নিজের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘অদ্ভুত এক নরক’।

“আমরা নিশ্চিত নই যে কী করতে হবে,” বলছিলেন তিনি। বন্ধুর রুম থেকে তিনি দেখেছিলেন হ্যামিলটন হলে পুলিশের অভিযান। ওই অভিযানের সময় তিনি যেখানে ছিলেন সেই ভবন থেকে বের হতে পারেননি।

মি. পারকিনসন জানান, ইউনিভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়াতে পর্যাপ্ত কর্মী না থাকার কারণে কলাম্বিয়া কর্তৃপক্ষ বাইরে খাওয়ার জন্য তাদের অর্থ দিয়েছে।

অনেকে আবার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্টিলের ব্যারিকেডের কাছে গিয়ে শ্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে পুলিশকে সরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন অনেকে।

অন্যদিকে, শিক্ষকরা বলছেন তারা এখনো জানেননা যে কীভাবে তাদের সেমিস্টার শেষ করবেন।

বুধবারও ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় পুলিশ দেখা গেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে যে সহিসংতার সময় পুলিশ সময়মত ব্যবস্থা নেয়নি।

বিবিসি এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও লস এলএঞ্জেলস পুলিশের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করেছে।

বিক্ষোভকারীরা হামলা শুরুর দুই ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছিলো আর বুধবার সকাল নাগাদ পুলিশ পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ স্থাপনে সক্ষম হয়।

গভর্নর সামাজিক মাধ্যম এক্স এ দেয়া পোস্টে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তার অফিস থেকেও বিবৃতি দেয়া হয়েছে।

“আইন পরিষ্কার। মত প্রকাশের অধিকার সহিংসতা, ভাংচুর কিংবা আইনহীনতার অধিকার দেয় না,” বলেছেন তিনি।

তিনি বলেছেন এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে যার মধ্যে ফৌজদারি বিচার, বরখাস্ত ও সাসপেনশন থাকবে।

এর আগে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হার্ভার্ড থেকে ইয়েলসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ফিলিস্তিনের পক্ষে এবং ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে। ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বয়কট করার আহবান জানাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।

সর্বশেষ পহেলা মে মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের দখল করে রাখা অ্যাকাডেমিক ভবন দখলমুক্ত করতে অভিযান চালায় নিউ ইয়র্ক পুলিশ। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে নয়টায় অভিযান শুরু করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে তারা হ্যামিলটন হল নামে ওই ভবনে প্রবেশ করেছে। সেখানে অবস্থান নেয়া বিক্ষোভকারীদের সবাইকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

তার আগে, কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলো।

অভিযানের বিষয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে “দখল, ভাঙচুর ও অবরুদ্ধ করার পর আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না”।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন বিক্ষোভ হতে হবে শান্তিপূর্ণ এবং “জোর করে ভবন দখল করা শান্তিপূর্ণ ব্যাপার না- এটা ভুল।”

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফক্স টেলিভিশনকে দেয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে দিনটিকে কলাম্বিয়ার জন্য দুঃখের দিন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

নিউ ইয়র্ক শহরের ডেমোক্র্যাট দলীয় কংগ্রেসম্যান জামাল বাউম্যান কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এ অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছেন। সেখানে পুলিশের উপস্থিতিতে তিনি ক্ষুব্ধ।

ইসরায়েলের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যক্তি ও কোম্পানিকে বয়কটের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই প্রচণ্ড ছাত্র বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।

এর আগে কলাম্বিয়ার শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অনেকে কমলা ও হলুদ রংয়ের ভেস্ট পড়ে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে অবস্থান নিয়েছিলেন।

শিক্ষার্থীরা তাঁবু খাটিয়ে ওই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছিলো। ওই তাঁবু সরানোর জন্য সোমবার দুপুর পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কয়েক ডজন শিক্ষার্থী ওই স্থানে সমাবেশ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 shadinota.net
Design & Development By Hostitbd.Com