পাঁচ বছরের বেশি হলেও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কোনো কুলকিনারা পায়নি বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মহল নানা আশ্বাস দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তবে সম্প্রতি অন্তর্জাতিক আদালত, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ইতিবাচক অবস্থান নেওয়ার আশার আলো দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। দ্রুত, নিঃশর্তভাবে সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাড়তি চাপ প্রয়োগের পরামর্শ বিশ্লেষকদের।
তথ্যমতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। পাঁচ বছরে যাদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২ লাখেরও বেশি। সমস্যা সমাধানে ওই বছরই মিয়ানমার সফর করেন, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়, যা এখনও পড়ে আছে আঁতুড় ঘরে। এরপর থেকেই রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে বাংলাদেশ। সবাই আশার বাণী শোনালেও কেউ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেননি। সবশেষে মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্র চীনের দ্বারস্ত হয় বাংলাদেশ। তবে এখন পর্যন্ত তারাও শোনাতে পারেননি আশার বাণী।
এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। সীমান্তে অস্থিরতা, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক, হত্যা, জঙ্গি থেকে শুরু করে বেড়েই চলেছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারও বিপাকে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হয়েছে। তবে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চায় সরকার। কোন পথে আসবে এই সমাধান, সে চিন্তায় কপালে ভাঁজ নীতিনির্ধারকদের।
সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির জানান, মিয়ানমার বলেনি তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে না। কিন্তু ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যে পরিবিশে তৈরি করা দরকার সে জায়গায়গুলোতে তারা একটুও এগোয়নি। তাই বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে চাপ দেওয়ার ছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের কথা বললেও নিজেদের বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে মিয়ানমারে। এমন দ্বৈত নীতির কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও। এক্ষেত্রে কূটনৈতিক তৎপরতা আরও জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
একই সঙ্গে শর্তহীনভাবে বাংলাদেশে থাকা সব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি বাড়তি চাপ সৃষ্টিরও পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
Leave a Reply