কারণে-অকারণে একরকম নিয়ম করেই রাজধানীতে বাড়ছে বাড়িভাড়া। অথচ আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাতে বিন্দুমাত্র নজর নেই বাড়ির মালিকদের। ফলে খরচের চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষের কাছে তা হয়ে গেছে এক নতুন আতঙ্ক! তাদের দাবি, বিশেষ সংস্থার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে।
রাজধানী ঢাকা বিশ্বের বড় মেগাসিটির একটি। যাপিত জীবনে পড়ালেখা, ব্যবসা বাণিজ্য বা কর্মসংস্থান- নানা কারণেই এই নগরমুখী হাজারো মানুষ। তবে নাগরিক কোলাহলের শহরের জীবনটা যে খুব স্বস্তির, বাস্তবে তেমনটা নয়।
এ ঢাকার বাসিন্দাদের প্রতিনিয়ত লড়তে হয় নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের সঙ্গে। যাতে ব্যয় বাড়ছে প্রতিটি খাতে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বছর শেষে যোগ হওয়া বাড়তি ভাড়া। এখন যা বেশিরভাগ রাজধানীবাসীর গলার কাটা। যেমন-গেল ডিসেম্বরেও বাসাভাড়া বৃদ্ধির নতুন নোটিশ জুটেছে ভাড়াটিয়াদের। এতে আরও বিষিয়ে উঠছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সংগ্রামী প্রতিটি দিন।
এক ভাড়াটিয়া বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। ফলে জীবনযাপনই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। আরেক ভাড়াটিয়া বলেন, সবকিছুর দর বেশি। বাচ্চার স্কুলের বেতন দিতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে আমরা টানাটানির মধ্যে আছি। ভাড়া বাড়ানোর পেছনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, গৃহ ঋণের সুদ বেড়ে যাওয়া, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাড়তি- কত শত অজুহাত মালিকদের। এক বাড়ির মালিক বলেন, সবকিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। সেটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের বাসাভাড়া একটু বাড়াতে হয়। অন্যথায় আমরা চলতে পারব না। আরেক বাড়ির মালিক বলেন, আমাদের বাইরের কোনো আয়-রোজগার নেই। এ বাসা ভাড়া দিয়েই চলতে হয়। সংসার চালাতে হয়। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হয়। সেই সঙ্গে ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে হয়।
নিয়মনীতি ছাড়াই বাড়ে বাড়ি ভাড়া। তাতে জিম্মি সাধারণ ভাড়াটিয়া। এক্ষেত্রে খুব একটা নজরও নেই সরকারের। এমন অভিযোগ বাংলাদেশ ভাড়াটিয়া ফেডারেশনের সভাপতি বাহারানে সুলতানর। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি বিল ভাড়াটিয়াকে দিতে হয়। সেসব তদারকির ব্যক্তির বেতনও দিতে হয় তাদের। শুধু বাসা ভাড়া নয়, ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে সবকিছু আদায় করেন মালিক।
১৯৯১ সালে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন করা হয়েছে ঠিকই। বাস্তবে যার প্রয়োগ নেই।
Leave a Reply