এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ জুলাই) জাতীয় সংসদে ইসির ভোট বন্ধের ক্ষমতা কমিয়ে আরপিও সংশোধনী বিল পাস হয়। বিরোধী দলের সদস্যদের আপত্তির মুখেও বিলটি পাস হয়।
আইনমন্ত্রী সংসদে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (সংশোধনী) বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিরোধী দলের বাছাই কমিটিকে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি হয়। যদিও বিরোধী দল দাবি করেছে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। অবশ্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে দাবি করেন, ইসির ক্ষমতা খর্ব করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
সংবিধান অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন আভাস দিয়েছে, আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারি মাসের শুরুতে সংসদ নির্বাচন হবে। এর আগে আরপিওতে সংশোধনী আনা হলো। আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করার পর কোনো আসনের পুরো ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। যেসব ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ আসবে, শুধু সেসব (এক বা একাধিক) ভোটকেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করতে পারবে। এরপর তদন্ত সাপেক্ষে ফলাফল বাতিল করে সেসব কেন্দ্রে নতুন নির্বাচন দিতে পারবে ইসি।
বর্তমান আরপিও অনুযায়ী- অনিয়ম বা বিরাজমান বিভিন্ন অপকর্মের কারণে নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে তারা আইনানুগ নির্বাচন করতে সক্ষম হবে না, তাহলে নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে ইসি। এখন এই ক্ষমতা সীমিত করে ইসিকে শুধু ভোটের দিন সংসদীয় আসনের (অনিয়মের কারণে) ভোট বন্ধ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১(এ) ধারায় বলা আছে, নির্বাচন কমিশন যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতিপ্রদর্শন, চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সংগত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে না, তাহলে যেকোনো ভোটকেন্দ্র বা ক্ষেত্রমতো সম্পূর্ণ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের যেকোনো পর্যায়ে ভোটগ্রহণসহ নির্বাচনী কার্যক্রম বন্ধ করতে পারবে।
অবশ্য ইসির কর্মকর্তাদের কেউ কেউ দাবি করেছেন, সংশোধনীতে ইসির ক্ষমতা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এতদিন আইনের এই ধারায় অস্পষ্টতা ছিল। এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইসি ভোট বন্ধ করতে পারবে, তা সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।
Leave a Reply