1. admin@kishorganjeralo.com : kishorganjeralo.com :
  2. admin@shadinota.net : shadinota net : shadinota net
ব্রেকিং নিউজ :

অ্যাপল কেন ভারত নিয়ে ব্যস্ত?

  • আপডেট সময় : শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩
  • ৯০ বার পঠিত

কিছুদিন আগে ভারতে নিজস্ব আউটলেট খুলেছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড অ্যাপল। শুধু আউটলেটই নয় ভারতে চালু কারখানার সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছে অ্যাপল। কিন্তু অ্যাপল কেন ভারত নিয়ে ব্যস্ত? চীনকে ল্যাং মারবে বলে?

ভারত বেশ কয়েক বছর ধরেই বড় বড় কোম্পানির জন্য অত্যন্ত আগ্রহের স্থান। এর অন্যতম কারণ হলো এর ক্রমবর্ধমান বাজার। অ্যাপল প্রধান টিম কুক সম্প্রতি মুম্বাই ও দিল্লিতে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আউটলেট উদ্বোধন করেছেন। এটাই ভারতের প্রথম অ্যাপল স্টোর। এ নিয়ে ঘটা করে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে নানা গণমাধ্যমে। বিশ্লেষকেরা একে বিশেষ ঘটনা হিসেবেই উল্লেখ করছেন। কারণ অ্যাপল ভারতে স্টোর খোলার অর্থ হলো দেশটির ভোক্তাদের নিয়ে কোম্পানিটির আলাদা ভাবনা আছে। আবার চেন্নাইয়ে নিজেদের কারখানার কাজও পুরোদমে এগিয়ে নিচ্ছে অ্যাপল। ফলে সব মিলিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারত-ভাবনা নিয়ে প্রযুক্তি দুনিয়া বেশ সচকিত।

জনসংখ্যায় চীনকে টেক্কা দেওয়ার দৌড়ে ভালোমতোই এগিয়ে আছে ভারত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ঠিক এই কারণেই চীনের বদলে ভারতে ঘাঁটি শক্ত করতে তৎপর অ্যাপল। ভারতের এই বিশাল বাজার হাতছাড়া করতে চাইছে না টিম কুকের কোম্পানি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কারণে চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না অ্যাপলের। ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই এশিয়ার বাজারে বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছে ট্রিলিয়ন ডলারের টেক জায়ান্ট।

কিন্তু ভারতে কি পাত্তা পাবে অ্যাপল? এই প্রতিষ্ঠান তৈরি করে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির প্রযুক্তিপণ্য। এগুলো বেশ উচ্চমূল্যেরও। ওদিকে ভারতে এ ধরনের পণ্যের বাজার তুলনামূলকভাবে ছোট। গবেষণা প্রতিষ্ঠান কাউন্টারপয়েন্ট বলছে, ভারতে অ্যাপলের মার্কেট শেয়ার গত বছর ছিল সাড়ে চার শতাংশ। তবে ভারতীয়দের মধ্যে মোবাইল হ্যান্ডসেট আপগ্রেড করার হার বাড়ছে। ভারতীয় ভোক্তাদের একটি অংশের মধ্যে আর্থিক সঙ্গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় অ্যাপলের পণ্য কেনার পরিমাণও ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ব্লুমবার্গ এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ভারতে অ্যাপলের আয় আগামীতে ৫০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। এর আকার হতে পারে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার।

টিম কুক এরই মধ্যে বলে দিয়েছেন, চীনে পণ্য উৎপাদনের যে অভিজ্ঞতা অ্যাপলের হয়েছে, সেটি ভারতেও প্রয়োগ করা হবে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এর ইঙ্গিত ভারতে বড় উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকেই। অর্থাৎ গত দুই দশক ধরে চীনে যেভাবে নিজেদের সম্পূর্ণ উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে অ্যাপল, ঠিক সেটিই ধীরে ধীরে ভারতে স্থানান্তর করা হতে পারে।

অ্যাপলের এই কৌশল নেওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ অবশ্যই আমেরিকা ও চীনের মধ্যকার চলমান দ্বৈরথ। এই দ্বন্দ্বের আবার দুটি দিক রয়েছে। একটি রাজনৈতিক, অন্যটি প্রযুক্তিগত। এবং এই দুটি আবার পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বাণিজ্য ও প্রযুক্তি – এ দুই খাতেই আমেরিকা ও চীন একে-অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে প্রতিনিয়ত। আমেরিকা একবার হুয়াওয়েকে আটকাচ্ছে, তো আরেকবার টিকটক নিষিদ্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ কারণে চীনও আছে যুদ্ধংদেহী ভূমিকায়।

ভারতের দিকে অ্যাপলের তুমুল আগ্রহের আরেকটি প্রধান কারণ হলো লজিস্টিকস সংক্রান্ত। করোনা মহামারির পর থেকেই চীন চলছে জিরো-কোভিড নীতিতে। এই নীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হচ্ছে অ্যাপলকেও। ফলে উৎপাদনের সাপ্লাই চেইন বিঘ্নিত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এমনকি গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে আইফোন ফোরটিন প্রো-এর উৎপাদনেও ঝামেলা হয়েছে ব্যাপক।

ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, এসব কারণেই চীনের পাশাপাশি ভারতেও রপ্তানিমুখী উৎপাদনব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে অ্যাপল। এর অন্যতম লক্ষ্য হলো, চীনের বিকল্প হিসেবে ভারতকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করে তোলা এবং চীনের ওপর একক নির্ভরশীলতা ক্রমে কমিয়ে আনা। এরই মধ্যে ভারতে আইফোন ফোরটিন উৎপাদনের ঘোষণাও দিয়ে ফেলেছে অ্যাপল।

ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান জেপিমরগান চেজ এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যে আইফোনের মোট উৎপাদনের এক-চতুর্থাংশ চীনের বাইরে থেকে তৈরি করবে অ্যাপল। ভারতের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে অ্যাপলের পছন্দের তালিকায় আছে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড। নিক্কেই এশিয়াও এ দুটি দেশের সম্ভাবনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

তবে চীনকে একেবারে ছেড়ে দেবে না অ্যাপল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীনের বিশাল ভোক্তাশ্রেণিকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয় অ্যাপলের পক্ষে। শুধু চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে গেল বছর ৭০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়েছে অ্যাপলের। তাছাড়া উৎপাদন ব্যবস্থা চীনের বাইরে নিয়ে গেলেও, উৎপাদনের উপকরণগুলোর জন্য চীনের ওপরই নির্ভরশীল আছে অ্যাপল। এবং এই পরিস্থিতির আশু পরিবর্তনও সম্ভব নয়।

অর্থাৎ, চীনের ওপর অতি নির্ভরশীলতা থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছে টিম কুকের কোম্পানি। আর এই জায়গাতেই চীনের একচেটিয়া লাভের গুড়ে ভাগ বসাতে চাইছে ভারত। সুতরাং অ্যাপলের বাণিজ্যে অচিরেই ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। হয়তো এতেই নির্ধারিত হবে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ টেক জায়ান্টের বিজনেস ইকোসিস্টেমের নতুন মেরুকরণ!

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 shadinota.net
Design & Development By Hostitbd.Com