এ সময় নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জিয়াউর রহমান, এরশাদ ও খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যার ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চেয়েছিল। তারা প্রিন্সেস টিনা খান, লাকি খানদের নিয়ে এসে যুবকদের মধ্যে ছেড়ে দিয়েছিল। নৌবিহারে নিয়ে গিয়ে মেধাবীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে তাদের বিপথগামী করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, যুব সমাজের কাছে মুখোরোচক কিছু কথা বলে তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যাতে তারা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করতে না পারে। তারা যেন ২৫ মার্চের গণহত্যাকে লালন না করে, এটাকে নিয়ে যুবসমাজ যেন নতুন কোনো ইতিহাস করতে না পারে। এটাই ছিল জিয়াউর রহমানসহ হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, ২৫ মার্চের গণহত্যার মতো বর্বর ঘটনাকে ২১ বছর ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। এসবকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশের দরিদ্রতাকে নিয়ে ব্যবসা করা হয়েছে। বাংলাদেশের দরিদ্রতাকে বিক্রি করে সাহায্য নিয়ে এসে বাংলার যুবকদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। বাংলার মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ইতিহাসকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইতিহাসের উপর আরেকটি ইতিহাস তৈরি করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুলের বাবা মির্জা রুহুল আমিন একাত্তরের গণহত্যায় জড়িত ছিলেন উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর একদিনের জন্য ঠাঁকুরগায়ের মানুষ মির্জা রুহুল আমিন ওরফে চোখা মিয়ার মুখ দেখেনি কখনো। কিন্তু ৭৫-এর ১৫ আগস্ট যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয় সেদিন লুঙ্গি পরেই ঠাঁকুরগায়ের চৌরাস্তায় এসে পাকিস্তান জিন্দাবাদ বলে স্লোগান দিয়েছিলেন। আজ সেই ফখরুল সাহেবদের মুখ থেকে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়।
বাংলাদেশে এখন আর কোনো ড. ইউনুস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে নৌ-প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা দারিদ্র্যকে জয় করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বল্পন্নোত দেশ থেকে মাধ্যম আয়ের দেশ হয়ে উন্নয়নশীল দেশের অপেক্ষায় আছি, আমরা উন্নত দেশের টার্গেট নির্ধারণ করেছি। বাংলার মানুষ এখন তিনবেলা খেতে পায়, কোনো শিশু এখন শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ে না, প্রতিটি শিশু এখন স্কুলে যায়, সবার পরনে কাপড় আছে, সবাই চিকিৎসা পাচ্ছে, বিনামূল্যে ওষুধ পাচ্ছে, বিনামূল্যে বই পাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি সমগ্র পৃথিবীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। দরিদ্রতা বিক্রি করে ড. ইউনুসরা নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা গণহত্যা সংগঠিত করেছে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে, মন্ত্রী করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার না করার জন্য আইন করা হয়েছে। পাকিস্তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী হয়ে সালাউদ্দিন কাদের, মুজাহিদদের মতো কুখ্যাত রাজাকাররা যখন বাংলাদেশের পতাকা পায় তখন গণহত্যার স্বীকৃত পাওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।
তিনি আরও বলেন, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত করেছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে নিয়ে নতুন প্রজন্ম পথ চলছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছি, একাত্তরের অপরাধীদের বিচার করেছি।
নৌ-প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে বাংলা ভাষার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলেছে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের স্বীকৃতি মিলেছে ঠিক একইভাবে ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করে এদেশের মাটিতে দোষীদের বিচার করা হবে।
জেলা প্রশাসক খালিদ মাহমুদ জাকির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদ সরকার, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের সভাপতি আবুল কলাম আজাদ।
Leave a Reply