ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবন, সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ভাংচুর করেছে সাবেক ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকেরা। তবে তাদের হটিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এসব সরকারি ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রোববার জইর বলসোনারোর হাজারো ডানপন্থী সমর্থক ব্রাসিলিয়ায় কংগ্রেস ভবনে হামলা চালান। দেশটির জাতীয় রঙের পোশাক পরে এবং গায়ে জাতীয় পতাকা জড়িয়ে তারা এ হামলায় অংশ নেন।
এ ঘটনায় কিছু বিক্ষোভকারী ফাঁকা সিনেট অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়েন। অন্যরা প্রেসিডেন্ট ভবন, সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য সরকারি ভবনে ঢুকে হামলা চালায়।
নিরাপত্তা বাহিনী কংগ্রেস ভবনসহ সরকারি ভবনগুলো বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কথা জানিয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের মতে, প্রায় ৩ হাজার বিক্ষোভকারী এই ঘটনার সাথে জড়িত। নতুন বামপন্থী প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা ক্ষমতা গ্রহণের এক সপ্তাহ পর এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল।
বিক্ষোভের ঘটনাকে বর্বরতা আখ্যা দিয়ে জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনার ঘোষণা দিয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা বলেন, ‘ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্টরা এমন কাজ করেছে, যা দেশটির ইতিহাসে কখনো হয়নি। জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে। যারা উসকানি দিয়েছে এবং অর্থ জুগিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
দাঙ্গার ঘটনাকে সামরিক অভ্যুত্থানের সঙ্গে তুলনা করেছেন ব্রাজিলের আইনমন্ত্রী ফ্লাভিও দিনো। তিনি বলনে, ‘এই মুহুর্তে আমরা প্রজাতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ক্ষয়ক্ষতির হিসাব কষছি। এটি সন্ত্রাসবাদ। এটি একটি অভ্যুত্থান চেষ্টা। আমরা বিশ্বাস করি, ব্রাজিলের অধিকাংশ নাগরিক এই ধরণের কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না।’
দাঙ্গার নিন্দা জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। তবে, এতে নিজের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
বলসোনারোর সমর্থকদের এ হামলার সঙ্গে দু বছর আগে ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার মিল খুঁজে পাচ্ছেন বিশ্লেষকরা। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ডনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হেরে যাওয়ার পর, এভাবেই ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়েছিল ট্রাম্পের সমর্থকরাও।
এদিকে, দাঙ্গার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে লুলার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সহ বিশ্বনেতারা। নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
গত ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে লুলার কাছে পরাজিত হন বলসোনারো। হেরে যাওয়ার পর নির্বাচনী ফলকে চ্যালেঞ্জ করেন তিনি। যদিও ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে সহযোগিতা করার কথাও জানান তিনি।
Leave a Reply