মি. আবু মারখিয়া বলছিলেন: “ইসরায়েলে নির্বাচনের পর, আমাদের ওপর হামলা বেড়েছে এবং হামলা আগের চেয়ে অনেক তীব্র হয়েছে।”

মি. বেন -গ্যভিরের প্রশংসা করে ভিডিও তোলা সৈনিককে পরে  কয়েকদিনের জেল দেয়া হয়েছিল। তবে তার কারাবাস নিয়ে ইসরায়েলে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছে। জাতীয়তাবাদীরা যুক্তি দিয়েছেন সামরিক বাহিনীর নেতারা উদারপন্থীদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে দেশের সুরক্ষায় নিবেদিত-প্রাণদের শাস্তি দিচ্ছেন।

‘চাপা আগুন উস্কে উঠেছে’

ইসরায়েলি সমাজের ভেতর বিষয়টি নিয়ে বহুদিনের যে টানাপোড়েন রয়েছে অধিকৃত হেব্রনের পরিস্থিতি সেই চাপা আগুনকে আবার উস্কে দিয়েছে।

শহরে দেখেছি পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ সমাবেশ আর উত্তেজনা – বসতি নির্মাণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি শান্তিকামীদের আন্দোলন – আবার তাদের বিরুদ্ধে বসতি সমর্থকদের মিছিল সমাবেশ।

ইশাই ফ্লেইশার বসতি নির্মাণকারীদের অধিকারের পক্ষে। তিনি নিজেকে পরিচয় দেন হেব্রনের ইহুদীদের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র হিসাবে। হেব্রন সফরে যাওয়া ইসরায়েলের শান্তিকামী কর্মীদের বিরুদ্ধে তার সমর্থকদের স্লোগান ছিল – তারা “বিশ্বাসঘাতক”।

“এই ছোট ভূখণ্ডটা আমাদের – উত্তরাধিকার পরম্পরায় এই ভূখণ্ড আমাদের। এর ওপর অবশ্যই আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। কারণ এই ভূখণ্ড আমাদেরই,” তিনি আমাকে বললেন।

এ মন্তব্য “বর্ণ বিদ্বেষী” আমার এমন কথা তিনি নাকচ করে দিলেন।

ইসা আমরো ফিলিস্তিনি আন্দোলন কর্মী
ইসরায়েলের শান্তি আন্দোলনকর্মীরা যারা হেব্রন সফরে গিয়েছিলেন তাদের উদ্দেশ্যে এক জমায়েতে বক্তৃতা দেবার পর গ্রেপ্তার হন ফিলিস্তিনি আন্দোলন কর্মী ইসা আমরো

অধিকৃত পশ্চিম তীরে থাকেন প্রায় ৩০ লক্ষ ফিলিস্তিনি।

ইহুদীদের বসতি এলাকায় বাস করেন প্রায় পাঁচ লাখ ইসরায়েলি। ইহুদী বসতিতে বসবাসকারী সবাই আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত, যদিও ইসরায়েল তা মানে না।

ইসা আমরো সুপরিচিত ফিলিস্তিনি আন্দোলনকর্মী এবং বসতি বিরোধী তরুণদের আন্দোলন গোষ্ঠি ইয়ুথ এগেনস্ট সেটেলমেন্টস-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ইসরায়েলি বাহিনী এবং প্যালেসটিনিয়ান অথরিটি উভয়েরই প্রকাশ্য সমালোচক। দুপক্ষের হাতেই তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

জাতিসংঘ এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন তাকে মানবাধিকার রক্ষাকর্তা বলে মনে করে এবং বারবার তাকে গ্রেপ্তার করার নিন্দা তারা করেছে।

যেসব ইসরায়েলি অধিকারকর্মী শান্তির পক্ষে, তাদের হেব্রন সফরের সময় মি. আমরো বিভিন্ন সমাবেশে বক্তৃতা দিয়েছেন। কিন্তু এর ফলে তিনি এখন ঘর-ছাড়া বলে জানালেন আমাকে।

বিবিসি যখন তার সাক্ষাৎকার নিচ্ছে, তখন সাদা পোশাকে চারজন ইসরায়েলি পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে গেল। এদের মধ্যে একজন পুলিশ অফিসারকে আমরা আগে দেখেছিলাম। তিনি ইসা আমরোকে দেওয়ালের গায়ে দাঁড় করিয়ে তাকে তল্লাশি করলেন। তারপর বললেন, “ন্যায়বিচারে বাধা দেয়ার জন্য” তাকে আটক করা হলো।

আমরা বিবিসির জন্য যখন ছবি তুলছি তখন যেসব ইসরায়েলি আন্দোলনকর্মী, বা ঘরবাড়িতে হামলা হওয়া যেসব ফিলিস্তিনি পরিবারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তাদের মতই মি. আমরোও বলছিলেন নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকে বসতি সমর্থকদের ক্ষমতার দাপট অনেক বেড়ে গেছে।

কিন্তু মাত্র ওইটুকুই তিনি বলতে পেরেছিলেন। কারণ সাক্ষাৎকারের মাঝপথে তাকে ধরে  নিয়ে যাওয়া হয়, যাতে কিছুদিনের জন্য তার মুখ বন্ধ থাকে।