চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার ব্যাপক হামলার পর দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ এখন আর মেটানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইউক্রেইন।
দেশটির বিদ্যুৎ কোম্পানি ইউক্রেনারগো জানিয়েছে, অবকাঠামো মেরামত করাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে তারা কিন্তু এখন এ কাজে আরও বেশি সময় লাগছে।
রাজধানী কিইভসহ ১৫টি অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও পানি না থাকায় পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত কঠিন’ বলে বর্ণনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইউক্রেইনজুড়ে শীত জেঁকে বসছে, হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রার মধ্যে তুষারপাত হচ্ছে। হাইপোথার্মিয়ায় দেশজুড়ে লোকজন মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা বিরাজ করছে।
বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে কিইভের প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দা ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখেছে বিদ্যুৎ নেই।
কিইভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো বিবিসি ইউক্রেইনীয়কে বলেছেন, নগরীতে বিদ্যুৎ, পানি ও উত্তাপের ব্যবস্থা না থাকলে ‘পরিস্থিতি মারাত্মক’ হয়ে উঠতে পারে।
কিন্তু ওই দিনই পরে ইউক্রেইনের কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে, সবগুলো অঞ্চলেই ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার কিইভের স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় নগরীটির বাসিন্দা রোমান বলেন, “গতি ধীর হলেও পানি আসা শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনও বিদ্যুৎ আসেনি।”
কয়েক ঘণ্টা পর তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত, ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর (কর্তৃপক্ষ) বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।”
সেদিন রাতে কিইভের আরেক বাসিন্দা তোনিয়া বিবিসিকে জানান, ৪৮ ঘণ্টা ধরে তাদের এলাকায় বিদ্যুৎ নেই।
“আজ আমাদের বাসায় পানি আছে কিন্তু গতি ধীর। এখনও বিদ্যুৎ নেই, ঘর গরম রাখার কোনো ব্যবস্থাও নেই,” বলেন তিনি।
ইউক্রেইনের কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে, তারা দেশজুড়ে স্থাপিত ৪০০০ হাজার কেন্দ্রে অস্থায়ী তাঁবুতে তাপের ব্যবস্থা করে মানুষকে শীত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। লোকজন এসব তাঁবুতে ফোনে চার্জ দিতে পারবে আর চা-কফি পানের সুযোগ পাবে।
ইউক্রেইনজুড়ে বিদ্যুৎ অবকাঠামোয় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে লাখ লাখ মানুষ বিদ্যুৎ ও পানিবিহীন অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তীব্র শীতের এই সময়ে হিটিং ব্যবস্থাও বন্ধ থাকায় দেশজুড়ে বহু মানুষ হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
Leave a Reply