এটি হবে প্রেসিডেন্ট পদের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৃতীয় দফার চেষ্টা।
ফ্লোরিডার পামবিচে তার নিজস্ব মার-আ-লাগো ক্লাবে ওই ঘোষণা দেয়ার সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘’এখান থেকেই আমেরিকার প্রত্যাবর্তন শুরু হলো। আমাদের দেশকে আমাদেরই বাঁচাতে হবে।‘’
মি. ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন মধ্যবর্তী নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের জন্য তার দল রিপাবলিকান পার্টির কোন কোন সদস্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই দায়ী করছেন।
দুই বছর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে যিনি পরাজিত করেছিলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
মার-আ-লাগোয় আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘’জাতি হিসাবে আমাদের অবক্ষয় হচ্ছে। জো বাইডেনের অধীনে গত দুই বছরে লাখ লাখ আমেরিকান কষ্ট, যন্ত্রণা, উদ্বেগ আর হতাশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।‘’
তিনি বলেছেন, ‘’আমেরিকাকে আবার মহান এবং সেরা করে তোলার জন্য আজ রাতে আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের একজন প্রার্থী হিসাবে নিজেকে ঘোষণা করছি।‘’
এই বক্তব্য দেয়ার কিছুক্ষণ আগেই প্রেসিডেন্ট পদের প্রার্থী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইলেকশন কমিশনে তিনি কাগজপত্র জমা দেন। সেই সঙ্গে তিনি তহবিল সংগ্রহের একটি অ্যাকাউন্টও চালু করেছেন।
সেই সময় মার-আ-লোগোয় তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সমর্থকরা ‘ট্রাম্প ২০২৪’ লেখা পতাকা ওড়াচ্ছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বক্তব্যে তিনি আগের অনেক বক্তব্য পুনর্ব্যক্ত করেছেন। যার মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা, জ্বালানি স্বাধীনতার মতো বিষয় রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার ব্যাপারে কোন প্রতিক্রিয়া আছে কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রায় ১১ হাজার মাইল দূরে, ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি টুয়েন্টি সম্মেলনে থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে।
‘’না, নেই,’’ বলেছেন মি. বাইডেন। গত সপ্তাতে একজন সাংবাদিক যখন তাকে বলেছিলেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শক্তিশালী সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে, তখন মি. বাইডেনকে হাসতে দেখা গিয়েছিল।
২০২৪ সালের পাঁচই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে, এতো আগে সেই বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণাকে একটি কৌশল হিসাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা, যার মাধ্যমে হোয়াইট হাউজের দৌড়ে রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীতে দূরে সরিয়ে দেয়া যায়।
বিবিসি সংবাদদাতা অ্যান্থনি জার্কার বলছেন, কয়েকটি কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এবারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগের বারের মতো সহজ হবে না।
এর কারণ হিসাবে তিনি বলছেন, প্রথমবার যখন তিনি অংশ নেন, তখন তার রাজনৈতিক কোন রেকর্ড ছিল না। হোয়াইট হাউজে তিনি কেমন দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেই সম্পর্কে কারও ধারণা ছিল না। কিন্তু এবার তার সেসব রেকর্ড রয়েছে, যা দিয়ে ভোটাররা তাকে বিচার করতে পারেন।
সেই সঙ্গে ছয়ই জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার ছায়া থেকে তিনি একেবারে মুক্তি পাবেন না।
অনেকে ধারণা করেন, এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রহের অন্যতম কারণ, তার বিরুদ্ধে যে একাধিক ফৌজদারি এবং দেওয়ানি মামলা ঝুলছে, সেগুলোর সুরাহা করতে সুবিধা পাওয়া। এর কোনটি হয়তো পুরাদস্তুর বিচারে গড়াতে পারে। তখন হয়তো তার নির্বাচনী প্রচারণার চেয়ে এসব মামলার তথ্য সংবাদ মাধ্যমে বেশি গুরুত্ব পাবে।
রিপাবলিকান দলের মনোনয়নের দৌড়ে তার হয়তো শক্ত একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতে হবে। তিনি হচ্ছেন ফ্লোরিডার গভর্নর জেব বুশ। তাকে দলের অন্যতম জনপ্রিয় প্রার্থী হিসাবে দেখা হচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বয়স এখন ৭৬ বছর। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় ব্যাপক পরিশ্রম করতে হয়। এর আগের বার তিনি সেটা করে দেখিয়েছেন, কিন্তু এবার কতটা পারবেন, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
Leave a Reply