সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে পেন্টাগন। তারা মনে করে জেনারেল আজিজের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৫ জুন) পেন্টাগনের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জেনারেল আজিজের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে পেন্টাগনের অভিমত ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদপ্তরের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার।
এদিনের ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন।
পেন্টাগন মুখপাত্রের কাছে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক ও নিরাপত্তাবিষয়ক অংশীদারত্ব কীভাবে অব্যাহত রেখেছে পেন্টাগন।
প্রশ্নকর্তা আরও বলেন, ‘মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার চরমভাবে লঙ্ঘনের মধ্যে দিয়ে ভুল পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পুলিশ-র্যাবের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং বর্তমান সরকার যেকোনভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করছে।’
জবাবে পেন্টাগন মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট রাইডার বলেন, ‘ব্যাপক দুর্নীতির কারণে স্টেট ডিপার্টমেন্ট জেনারেল (আজিজ) আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। গত মে মাসে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসন জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতিই পুনর্ব্যক্ত হয়েছে এবং সেখানে (বাংলাদেশ) দুর্নীতিবিরোধী যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার প্রতি এই দপ্তরের (পেন্টাগন) সমর্থন রয়েছে।’
পেন্টাগন মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমি এই কথা বলে শেষ করতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পর্ক রয়েছে। অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, সামুদ্রিক এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার মতো বিষয়ে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে অংশীদারত্ব রয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দুর্নীতির সঙ্গে ব্যাপকভাবে জড়িত থাকার দায়ে তার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। একইসঙ্গে জেনারেল আজিজ আহমেদের পরিবারের সদস্যদেরও যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সেসময় এক বিবৃতিতে বলেন, তার (আজিজ আহমেদ) কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, আজিজ আহমেদ তার ভাইকে বাংলাদেশে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি এড়াতে সহযোগিতা করেন। এটা করতে গিয়ে তিনি নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। এছাড়া অন্যায্যভাবে সামরিক খাতে কন্ট্রাক্ট পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার ভাইয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। তিনি নিজের স্বার্থের জন্য সরকারি নিয়োগের বিনিময়ে ঘুষ নিয়েছেন।
এই ‘ডেসিগনেশন’ বা নিষেধাজ্ঞার ফলে, আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশের অযোগ্য হবেন।
Leave a Reply