1. admin@kishorganjeralo.com : kishorganjeralo.com :
  2. admin@shadinota.net : shadinota net : shadinota net

সামনের বছর বৈশ্বিক মন্দা দেখা দিলে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে অামরা

  • আপডেট সময় : শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২
  • ২২৯ বার পঠিত
আগামী বছর বৈশ্বিক মন্দার আশংকা থেকে আগাম প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে এবং সে কারণে তার সরকার ইতোমধ্যেই আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

এর আগে গত মাসেই বিশ্বব্যাংকও তাদের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানিয়েছিলো যে বিশ্ব অর্থনীতি ২০২৩ সালের দিকে মন্দার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।

মূলত দু বছরের করোনা মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরেই বিশ্বে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা, যা মোকাবেলায় দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার হিমশিম খাচ্ছে।

তবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক অর্থনীতির এ হালের জন্য এর আগে ইউক্রেন যুদ্ধ আর পরাশক্তি গুলোর নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞাকেই কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পরিস্থিতি মোকাবেলায় দেশের মানুষকে প্রতি ইঞ্চি জমিতে শস্য আবাদের পরামর্শ দিয়েছেন যাতে করে উৎপাদন বাড়িয়ে মানুষ সঞ্চয় করতে পারে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে আমেরিকা ও রাশিয়ার নানা পদক্ষেপের কারণে ইতোমধ্যেই অর্থনীতিতে নানা প্রভাব পড়েছে এবং দ্রব্যমূল্য বেড়েছে অনেকখানি। সামনে সংকট আরও বেশি হলে অর্থনীতির অবস্থা কেমন দাঁড়ায় তা নিয়ে তাই বেশ উদ্বেগ আছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

বৈশ্বিক মন্দা ও বাংলাদেশ নিয়ে যা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী

যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর থেকে ঢাকায় ফিরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ব্রিটেনের রানীর শেষকৃত্যানুষ্ঠান ও জাতিসংঘের অধিবেশনের সময় বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে জানান যে, তারা বিশ্বময় একটি দুর্ভিক্ষের আশংকা করছেন এবং ২০২৩ সালে দুর্যোগময় সময় ঘনিয়ে আসছে বলে মনে করেন।

তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন যে বাংলাদেশের এ মূহুর্তে উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো যা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

“কিন্তু বিশ্ব যদি সমস্যায় থাকে সেক্ষেত্রে আমরা কি ভালো থাকব? এ জন্য মানুষের কষ্ট লাঘবে যা করা দরকার তার সব উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। আগামী বাজেট নিয়েও এখনি চিন্তা করা হচ্ছে,” সংবাদ সম্মেলনে বলছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই বিলাসদ্রব্য আমদানি সীমিত করেছে ও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আমদানিয় ব্যয় কমিয়ে এনেছে।

বিশ্বব্যাংক যা বলেছিলো

ওয়াশিংটন থেকে গত মাসেই বিশ্বব্যাংক তার ‘বিশ্বে কি মন্দা আসন্ন’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির তিন মূল চালিকাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপের অর্থনীতি দ্রুত গতি হারাচ্ছে। ফলে আগামী বছরে সামান্য আঘাতেও মন্দা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

বিশ্বব্যাংক এ বিষয়ে যে আশংকা করেছে সেটি বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বৈশ্বিক এ সংস্থাটি বলছেন সম্ভাব্য এই মন্দায় মারাত্মক পরিণতি ভোগ করবে মূলত উঠতি বাজার ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি।

কিন্তু কী ধরণের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে বাংলাদেশের জন্য

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে তার একাধিক বক্তব্যে ২০২৩ সালের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলে মূলত খাদ্য সংকটের দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের কয়েকটি অনুষ্ঠানে তিনি দেশবাসীকে তাদের অব্যবহৃত জায়গা জমিতে শস্য আবাদের পরামর্শ দিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক সায়মা হক বিদিশা বলছেন বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে।

এগুলো হলো :

১. রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে

২. আমদানি করা খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে

৩. মন্দায় বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম কমলে তার সাথে দেশের বাজারের সমন্বয় সাধন করা

৪. রেমিটেন্স কমতে পারে

“বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়লে বাংলাদেশের রপ্তানিতে এর প্রভাব পড়বে কারণ তৈরি পোশাকের চাহিদা কমবে। তবে সঠিক ভাবে এগুতে পারলে এখানে কিছুটা ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে। কারণ বাংলাদেশ যেসব পোশাক রপ্তানি করে সেগুলো খুব উচ্চ মূল্যের নয়,” বলছিলেন সায়মা হক বিদিশা।

তার মতে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের বড় অংশ তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকলেও বৈশ্বিক মন্দায় তাতেও প্রভাব পড়তে পারে। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো পশ্চিমাদের কাছে যে রপ্তানি করে তাতে প্রবৃদ্ধি কম হলে এসব কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা তৈরি হবে।

এছাড়া বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে খাদ্য পণ্যের দাম। কারণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য পণ্য বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়।

“বৈশ্বিক মন্দা দেখা গিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে সেটি প্রভাব ফেলবে। আমদানি করা পণ্যগুলোর দাম বাড়বে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বৈশ্বিক মন্দায় কমে আসলে সেটি কিছু স্বস্তিরও কারণ হতে পারে,” বলছিলেন সায়মা হক বিদিশা।

তবে সম্ভাব্য বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে যদি দেশের সার্বিক রপ্তানি আয় কমে আর আমদানি আয় বেড়ে যায় তাহলে চলতি বছরের মতো আবারো ডলার সংকট তৈরি হতে পারে।

সায়মা হক বিদিশার মতে জ্বালানি তেলের দাম মন্দায় কমে আসলে বাংলাদেশের বাজারে তার সমন্বয়টা বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে পারলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবে।

তবে কৃষি আর রেমিটেন্সে প্রণোদনাসহ আনুষঙ্গিক পদক্ষেপ ঠিক মতো নিতে পারলে মন্দার চাপ মোকাবেলা করা কিছুটা সহজ বলে বলে মনে করেন তিনি।

একই সাথে চলতি বছর ডলার সংকট মোকাবেলায় যেভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সে ধরণের পদক্ষেপ নেয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই রকম আরো কিছু জনপ্রিয় সংবাদ

© All rights reserved © 2022 shadinota.net
Design & Development By Hostitbd.Com