জ্বালানি সংকট, ব্যাংক ঋণের সুদহার বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার জেরে বিনিয়োগ তলানিতে। ফলে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় কম। এর প্রভাব পড়েছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতেও। অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন করতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান বাড়ানো ও দুর্নীতি কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।বেসরকারিখাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ব্যয় দেখে বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে মোটাদাগে ধারণা পাওয়া যায়। চলতি অর্থবছরে এই দুই সূচক হতাশ করছে। জুলাই-এপ্রিল সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি ব্যয় ছিল ২৩৯ কোটি ডলারের কিছু বেশি, যা বছর ব্যবধানে ২১.৯ শতাংশ কম।একই সময়ে ঋণপত্র খোলার হার কমেছে ২৭.৪৬ শতাংশ।। আর এপ্রিলে বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র সাড়ে ৭ শতাংশ।গত বছরের গণ-অভ্যুত্থান ও পরের রাজনৈতিক অস্থিরতা, মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদের হার বাড়ানো এবং জ্বালানি সংকটের ফলে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিনিয়োগ। এতেই সূচকগুলো নিম্নমুখী জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামিম এহসান বলেন, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর দেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা খারাপের দিকে গিয়েছিল। তখন ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে আগ্রহী ছিল কম। যার প্রভাব পড়েছে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে।
বাংলাদেশের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণ। এমন পরিস্থিতিতে দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর যখন বিকল্প নেই, তখন বেসরকারিখাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া হতাশার বলে মন্তব্য অর্থনীতিবিদদের।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশে এখনও ব্যবসার পরিবেশে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। বন্দর, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স ও ইনকাম ট্যাক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে আগের সমস্যাগুলোই রয়ে গেছে। এর ওপর এলডিসি থেকে উত্তরণের পর নতুন ধরনের চাপ আসবে কিনা, তা নিয়েও ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলমান অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করতে খোলা ঋণপত্রের, নিষ্পত্তির হার কমেছে সাড়ে ২৫ শতাংশের বেশি।
Leave a Reply